রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন

ভারতে যায় স্বর্ণ, আসে মাদক

ভারতে যায় স্বর্ণ, আসে মাদক

স্বদেশ ডেস্ক:

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সীমান্ত বেনাপোল-শার্শা দিয়ে ভারতে কোটি কোটি টাকার সোনা ডলার পাচার হচ্ছে, আর ওপার থেকে আসছে মাদক। আন্তর্জাতিক সোনা চোরাকারবারিরা বেনাপোলকেই ব্যবহার করছে নিরপদ রুট হিসাবে। ভারতে পাচার হওয়া সোনা ও ডলারের বিনিময়ে আসছে ফেনসিডিল, গাজা ও হোরোইন। বিজিবি ও পুলিশের হাতে প্রায়ই সোনা ডলার ও মাদক সহ চোরাকারবারিরা আটক হলেও থেমে নেই তাদের অবৈধ ব্যবসা। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবাধে চলছে এসব ব্যবসা।

বেনাপোল ও শার্শা সীমান্ত অঞ্চলের গোগা রুদ্রপুর পুটখালী, দৌলতপুর, সাদিপুর, রঘুনাথপুর, শিকারপুর, পাকশিয়া দিয়ে বেশীর ভাগ সোনা ডলার পাচার হচ্ছে এবং ভারত থেকে তার বিনিময়ে আসছে ফেনসিডিল, মদ, গাজা, হেরোইন। বিশেষ করে সাদিপুর, বড় আচড়া ও দৌলতপুর সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ভোর রাতে বিজিবি ও প্রশাসনকে ম্যানেজ কবে চোরাচালানীরা মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য আনা নেয়া করছে। বেনাপোলের ভবারবেড় রেল ষ্টেশন এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ফেনসিডিল। এখানে কয়েকটি বাড়িতে খুচরা ও পাইকারি ফেনসিডিল বিক্রি হয়ে থাকে। এরা অভিনব কায়দায় এসব ফেনসিডিল ইট বেধে পুকুরে ডুবিয়ে রাখে কখনো চুলার ভিতর আবার নির্জন পরিত্যাক্ত জায়গায় লুকিয়ে রাখে। এসব জায়গা থেকে বেনাপোল বিজিবি ও পোর্ট থানার পুলিশ কয়েক দফায় ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। আবার কয়েকজনকে ফেনসিডিলসহ আটকও করেছে। আবার অভিযোগও উঠেছে কাউকে কাউকে আটকের পর ছেড়েও দিয়েছে কোনো এক অজানা কারনে। সম্প্রতি বেনাপোল এর ভবারবেড় গ্রাম থেকে এক নারীকে ডিবি পুলিশ আটক করে ২ ঘন্টা পর ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই এলাকার একজন বাসিন্দা। তবে সে শর্ত জুড়ে দেন তার নাম প্রকাশ না করার। তার নাম প্রকাশ করলে তাকে নানান হয়রানির বা জীবন নাশের মত ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি বলেন। বেনাপোল চেকপোষ্টের ব্যবসায়ি এস এম মারুফ বলেন, বেনাপোল সীমান্তের প্রতিটি অলি গলিতে ডিমের খোসার মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে ফেনসিডিলের বোতল। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন দেখতে হয় এসব মাদক এর বোতল।

গত ৪ জানুয়ারী যশোর-বেনাপোল সড়ক থেকে মেহেদী হাসানকে ৫৮৭ বোতল ফেসিডিল সহ আটক করে বিজিবি, ৭ জানুয়ারী নাভারন যাদবপুর থেকে ৩৯২ বোতল ফেনসিডিল সহ মিজানুর রহমান ও মফিজুর রহমানকে আটক করে। ২৩ জানুয়ারী আমড়াখালী থেকে রিংকু নামে এক যুবককে ৭৮ বোতল ফেনসিডিল সহ আটক করে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ, ২৭৭ বোতল ফেনসিডিল সহ ২২ জানুয়ারী আটক করে শফিকুল নামে এক যুবককে পুলিশ।

৩ ফেব্রয়ারী জাকির হোসেন নামে এক যুবককে ১২৫ বোতল ফেনসিডিল সহ আটক করে পুলিশ। ৫ ফেব্রুয়রী সীমান্তের সাদিপুর থেকে জিহাদ নামে এক যুবককে ১০টি স্বর্ণের বার সহ আটক করে বিজিবি। ৮ ফেব্রয়ারী ৩ কেজি ৪শত ২৮ গ্রাম স্বর্ণ সহ বড়আঁচড়া গ্রাম থেকে ইকবাল হোসেন নামে আটক করে এক যুবককে বিজিবি। ১৫ ফেব্রয়ারী দৌলতপুর সীমান্ত থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ২০৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে পুলিশ। তবে মালের মালিক হিসাবে আরমান আলমগীর ও মুক্তার নামে তিনজনের নামে মামলা দিয়েছে ।২৩ ফেব্রুয়ারি কালিয়ানী থেকে তবিবর রহমান নামে একজনকে ৩১ পিছ ইয়াবা সহ আটক করে বিজিবি। ২৫ ফেব্রয়ারী অভিনব কায়দায় জামার পকেটে ফেনসিডিল পাচারের সময় ৩৩টি পকেট থেকে ৩৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে বিজিবি।

এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খান বলেন, মাদকের ব্যাপারে যথেষ্ট তৎপর রয়েছে পুলিশ। যারা মাদকের সাথে জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আগের চেয়ে ফেনসিডিল বেশী উদ্ধার হচ্ছে বলেও তিনি জানান। বেনাপোল কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার লাল বলেন, মাদকের ব্যাপারে বিজিবি সর্বদা তৎপর রয়েছে। শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, মাঝে মধ্যে মাদকের ছোট বড় চালান ধরা পড়ছে। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877